বাঁশখালী প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে আহত ২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় শিমুল আহমেদ (২২) চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১.৩০ মিনিটের দিকে রাজেউল ইসলাম (২৫) চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে মারা যান। নিহত রাজেউলের বাড়ী দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদিঘী ইউনিয়নের নথন জামদানী এলাকায় আর শিমুল আহমদের বাড়ী মৌলভী বাজারের শ্রীমঙ্গল এলাকার জানাহুরা গ্রামে।
গত ১৭ এপ্রিল শনিবার গন্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে ৫ জন মারা যান এবং পরবর্তীততে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আর ২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এ নিয়ে মোট শ্রমিকের মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়ে ৭ জন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ওই শ্রমিকের নাম শীমুল আহমেদ (২২)। তার বাড়ি সিলেটের শ্রীমঙ্গলের জানাহুরা গ্রামে। তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সন্ধায় মারা যান।
রাজেউলের বোন স্বপ্না মোস্তারিন বলেন, ২০ তারিখ রাত দেড়টায় আমার ভাই চট্টগ্রামের বেসরকারী ক্লিনিক পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সে বিদ্যুৎ প্রকল্পে বয়লার ম্যান ছিল। তার লাশ গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিউল কবির বলেন, পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদানের ঘটনায় বাঁশখালী থানা পুলিশ বাদী হয়ে গত শনিবার রাতে মামলা করেছেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজারজনকে আসামি করা হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা, গাড়ি পোড়ানোসহ ২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের চিফ কো–অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১ হাজার ৪০ থেকে ১০৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তবে দুই মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিবেশ শান্ত রয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় মারা যাওয়া অপর পাঁচ শ্রমিক হলেন মাহমুদ রেজা (১৮), মোহাম্মদ শুভ (২৪), রনি হোসেন (২২), মোহাম্মদ রাহাত (২২) এবং মোহাম্মদ রায়হান (১৯)। এ ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার তদন্ত চলছে। একটি মামলা দায়ের করেছে এস আলম কতৃপক্ষ। অপরটি করেছে বাঁশখালী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় দুটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালে বাঁশখালীতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বিরোধী আন্দোলনে ৪ জন এবং ২০১৭ সালে একজন সহ এ পর্যন্ত ১২ জন নিহত হয়েছেন।