বিশ্বের তাবূত শক্তিশালী মুসলিম দেশগুলি ইসরায়েলের পক্ষে, সুতরাং এখানে মানতে হবে ইরানের হামলা কোন জাতিগত কিংবা ধর্মীয় নয়।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনির গাজাতেও চলমান সংঘর্ষ একই রকম কোন ধর্মীয় কারণে নয়।
সেটা পরিস্কার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে,প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেছেন -গাজাকে শান্ত রাখতে হলে গাজা থেকে আগে হামাসকে উৎখাত করা লাগবে।
হামাস স্যারেন্ডার করলেই গাজাতে শান্তি ফিরবে বলে তিনি জাতীর উদ্দেশ্যে বক্তব্যে বলেছেন।
অপরদিকে সিরিয়াও মুসলিম দেশ, আসাদকে সরিয়ে বিদ্রোহীরা এরপরের দিনই সিরিয়ার ভূমিতে ইসরায়েলবাহিনীকে আমন্ত্রণ করে নিজেদের সামরিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেন।
এবং সিরিয়ার নবগঠিত সরকারকে ইসরায়েলের সাথে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেয় আমেরিকা,সেই নির্দেশ মতো আমেরিকার সাথে সিরিয়া আর ইসরায়েল খোঁদ সৌদি আরবে মিটিং করে একসাথে চলার চুক্তি সম্পাদন করেন।
অথচ!সিরিয়ার বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার সাথে সাথেই আমরা বাংলাদেশীরা মক্কা বিজয়ের মত উল্লাস করেছিলাম।
কিন্তু ২৪ঘন্টা পার না হতেই সিরিয়ায় যখন আমেরিকার মদদে ইসরায়েল সরাসরি ঢুকে সকল সামরিক স্থাপনা নিয়ন্ত্রণ নেয় ঠিক তখন আমরা চুপ।
বাশার আল আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সবচেয়ে বেশী খুশি হয়েছি আমরা কিছু বাংলাদেশী, আর খুশি হয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহু।
তাহলে এখানে আমাদের চাওয়া পাওয়া নেতানিয়াহুর মতোই নয় কী?
আমরা এখানে চলে যাচ্ছে ইসলাম, ভেঙ্গে যাচ্ছে ইসলাম,ধুলিস্যাৎ হচ্ছে ইসলাম, এসব বুলি আউড়ানো বার্তা দিই মূলত কিসের স্বার্থে?
মূলত আমরা কেউ ইসলামের স্বার্থে কথা বলিনা,ইসলাম যেহেতু আমাদের আবেগ সেই আবেগকে কাজে লাগিয়ে যদি -কিন্তুর -ফাঁকে কিছু সুবিধা আদায় হলেই চলে।
আমরা ফিলিস্তিনির পক্ষে এটা চিরাচরিত সত্য,তবে গাজার মাসুম বাচ্চাদের বাঁচানোর জন্য হামাসকে গাজা থেকে সরে যেতে কিংবা ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের সাথে আলোচনা করে লক্ষ লক্ষ তাজা প্রাণ বাঁচানোর জন্য কি একবারও পরামর্শ দিয়েছি?
মনে রাখতে হবে জিহাদে প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনে শত্রুর সাথে সাময়িক সন্ধি করা লাগলে সেটাও করা দরকার, শুধু মাত্র অবুঝ শিশুদের যাতে নিহত চেহারা দেখতে না হয়।
আমরা মিছিল করে প্রতিবাদ জানাতে পারি,জানাতে পারি আমাদের পূর্ণ সমর্থন, কিন্তু প্রশ্ন ওঠে এসবের বিনিময়ে কি থেমেছে কোথাও রক্তপাত! রক্তপাত তো থামেইনি বরং আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে আমাদের দেশের বাটার শো রুম, বার্গারের শো রুম লুটপাট করে উল্টো বিশ্বে আমরা হেয় হয়েছি অবাধ্য জাতী হিসেবে।
যেখানে ভুক্তভোগী ইরান এবং আরেক শক্তিশালী দেশ রাশিয়া ভাইয়ের মতই,সেখানে রাশিয়াই চেয়ে চেয়েই আছে ইরানের আর্তনাদ।
আর আমাদের চারিদিকে ভারত -আল্লাহ না করুক কোন একটা অজুহাতে আমাদের উপর কেউ হামলা করলে বাঁচাতে কে আসবে সেটা নিয়ে চলতে হবে আমাদের আগামীর পথচলা।
আমাদের বুঝতে হবে এবং জানতে হবে ইরান আর রাশিয়া যেমন ভ্রাতৃদ্বয় সম্পর্ক,অপরদিকে ভারত এবং ইসরায়েলও ঠিক তেমন মধুর সম্পর্ক।
অতএব, আমাদের আবেগকে ততোদূর সংযত রাখতে হবে- যতোদূর আমাদের নিরাপত্তার বিঘ্ন না ঘটে।
আরেকজনের জন্য মায়াকান্না যেন আমাদের জীবনে অমাবস্যার মতো রাত না আনে।